“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১১

তিনটি কবিতা

**********************










       (c) ছবি


ন্দ,অন্তর্গত
===================

ছন্দ ছাড়া,অন্তর্গত কোনো ছন্দ ছাড়া
মর্মগত কথাগুলি কোনোদিনই মর্মরিত হবেনা অক্ষরে,
প্রতিটি চেষ্টার শেষে কাশীরাম দাস আর কৃত্তিবাস ওঝা
ফিরে ফিরে আজো মনেপড়ে...
এবং বঙ্কিমবাবু আর সেই কালী সিংগি দু’য়ে
গূঢ় সে ছন্দের ছায়া গদ্যের শরীরে বিলীয়ে –
সেই সত্য আজো যায় নীরবে জানিয়ে ...

ছন্দ জানেনা যারা
তারাই দঃখ পেয়ে ভস্মহয় অন্তরালে অথবা খুশিতে
তুমুল বোমার মতো অপরের মর্মে ফেটেপড়ে ...
আর যারা সেই ছন্দ মর্মে চিনে নিতে
পেরেছে – তাদের শোক,আনন্দ ও স্মৃতি
নদীর গহন ছন্দে মিশেযায়
সাগরের ব্যাপ্ত মোহানাতে।।

**********************







 (c) ছবি

বিস্মৃতি নির্ভর
=================

মেঘেমেঘেই আধেক বেলা গেলো,
সন্ধ্যানামে নিঝুম নদীর ধারে ...
বাদ্‌লা হাওয়ায় প্রদীপ নিভেগেলে
উতল হাওয়া ডাকলো অন্ধকারে —

যেপথ দিয়ে শরৎ আজো আসে
সেসব পথে ধানের ক্ষেতে জল,
হাওয়ায় দোলে আদুল ঘাসের দেহ –
এখন শুধুই বিস্মৃতি সম্বল...

এমন রাতে আলেয়া প্রিয় সখী,
এমন রাতে যক্ষ বুড়ো বট ,
এমন রাতে বাঁশের ঝাড়ে হাওয়া
আকূল স্বরে গায় কি ছায়ানট?

এমন রাতে চাঁদ ওঠেনা বনে,
যায়না ভ্রমর কৃষ্ণকলির কাছে –
এমনি এক আকারবিহীন রাত
সামনে আমার আজকে শুয়েআছে ...


কবেই আমার যাওয়ার কথাছিল,
মেঘের ঘোরে পাইনি কিছুই টের –
মেঘে মেঘেই দিন ফুরিয়ে গেলে
আবার হাওয়া ডাকলো যদি ফের
এ রাত আমার নিয়তি হোক্‌ তবে
মেঘলা আকাশ সুদূর তেপান্তর,
ভাসুক ময়ূরপংখী অথৈ জলে ...
হোক্‌না শুধুই বিস্মৃতি নির্ভর।।

**********************










(c)ছবি

কাটবে নিছক মন্দভালোয় ...
=====================

লেখার আগেই ফুরিয়ে গেলো অনেক খাতা –
রাত্রি নিঝুম, নদীর চরে নৌকা বাঁধা,
নিরক্ষরা আকাশ ভাসে তারার আলোয়,
আর কতোকাল কাটবে নিছক মন্দভালোয়?
অন্ধকারে আমি তোমার মুখ দেখিনা,
আমারো হাত হারিয়ে গেছে অন্ধকারে –
আলোর কাছে বিকিয়ে দিয়ে সব ঠিকানা
জলের ছলাৎ শব্দ শুনি অন্ধকারে ...

লিখতে গেলেই ফুরিয়ে আসে লেখার কথা –
চিঠির পাতা ওড়ায় বাতাস নদীর ধারে,
কুড়িয়ে কথা রাখাল বালক আপন মনে
আকূল সুরে একলা বাজায় মাঠের পারে ...

নিরক্ষরা আকাশ জাগে তারার আলোয়,
আর কতোকাল কাটবে নিছক মন্দভালোয়?

২টি মন্তব্য:

Biplob Rahman বলেছেন...

চমৎকার সব কবিতা। চিত্রকল্পগুলো খুব আপন। চলুক।
---
ফেসবুকে শেয়ার করলাম।

সুশান্ত কর বলেছেন...

সপ্তর্ষি সত্যি আমাদের সবচে ভালো লিখিয়েদের অন্যতম! কবিতা ওর প্রেম,ধর্ম, সাধনা এখানে ভ্রমণের জন্যে ধন্যবাদ!