“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১২

অনাবৃষ্টি... খরা... অতঃপর... ?

            ১৫ জুলাই, বুধবার। সকাল ১০-০৫ মিনিট। নিত্যদিনের চার্টার্ড বাসে চেপে বিস্ববিদ্যালয়ের পথে। চাতলা হাওরের মধ্য দিয়ে বাসটা যাচ্ছিলো। পাশের সিটে বসা রমাদি           ( বাংলার অধ্যাপিকা) হটাৎ বলে উঠলেন, ‘দ্যাখ-ছিস? অন্য বছর এরকম সময় হাওরটা জলে টই- টুঁম্বুর হয়ে যায়... আর এবার...? মাত্র অর্ধেক হাঁটু জল...।
       এ বার তাহলে বৃষ্টি কি আর হবেই না?........
      ওই দিন দুপুর ১টা ২৪মিনিট; মোবাইলে পত্রিকা দফতরের ফোন এল। ও প্রান্ত থেকে... ঊঃফ! কি গরম! এই গরম নিয়ে যদি একটু কলম ধরেন...।
     সন্ধ্যা ৭-১৫ মিনিট। বাড়ি ফিরে ডি ডি -১ এ অসমিয়া বাতরি শুনছিলাম। জানা গেল, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ১৪ টা জেলাকে খরা কবলিত ঘোষণা করেছেন। বলা বাহুল্য, বরাক উপত্যকার কাছাড় ও হাইলাকান্দিও সে তালিকায় রয়েছে।
     তাৎক্ষনিক প্রশ্ন মনে জাগল, (যেটা আর পাঁচ জনেরও স্বাভাবিক ভাবেই হয়ে থাকবে)। প্রশ্নটা হচ্ছিল, একই তল্লাটে, একই জল হাওয়ায় তো আমাদের করিমগঞ্জ জেলা-টাও। ভাবছিলাম... সেটা কেন বাদ পড়ল? সীমান্ত জেলা বলে কি না? পাছে খরা-টা পাশের দেশেও পাচার হয়ে যায়? কেনই বা বাদ পড়ল রাজ্যের বাকি সবগুলো জেলাও?
    ততক্ষনে অন্য একটা ফোন এসে গেছে। আর পাঁচটা কথার পর এ বিষয় নিয়ে কথা তুলতেই ও প্রান্তের ভদ্রলোক চেঁচিয়ে উঠলেন... ‘আরে মশাই... শাসক দলের নেতা মন্ত্রী না থাকলে সে জেলায় খরা হবে কি করে?
     মনে মনে বললাম,...... দুর্মুখ কোথাকার!
     সালটা ছিল ২০০৯।
     সে যাই হোক।
   গড়পড়তা হারে সে বছর যে বৃষ্টি কম হয়েছে, সেটা তো দেখাই যাচ্ছিলো। শুধু ওই বছর নয়, সাম্প্রতিক বছরগুলো বলাই ভালো।
   সেবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের যে টা থিম ছিল, তা হচ্ছে, ‘ইওর প্ল্যানেট নীডস ইউ... ইউনাইট টু কমব্যাট ক্লাইমেট চেঞ্জ’... (...যে গ্রহে তুমি রয়েছ, সেটা তোমাকে চাইছে, জল বায়ু পরিবর্তন রোধে তোমরা সঙ্ঘবদ্ধ হও)।

         জল বায়ু পরিবর্তন নিয়ে চিন্তা-চর্চা এবং হৈ চৈ সাম্প্রতিক কালে একটু বেশি-ই হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে, তেমনটার যথেষ্ট প্রয়োজনও রয়েছে । সে বছর শেষের দিকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে বিশ্বের সবগুলো দেশের শীর্ষ ব্যক্তিদের জড় হওয়ার কথা ছিল। বলা বাহুল্য, ১৯৯৭ সালের গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে জাপানে যে কিয়োটো প্রোটোকল হয়েছিলো, তার পরে পরেই সেটা ছিল বৃহত্তম সম্মেলন।
      কিয়োটো প্রোটোকলে বলা হয়েছিলো, ২০০৮ থেকে ২০১২, ওই পাঁচ বছরে আমেরিকা, চীন এবং গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনকারী অন্যান্য সব দেশকে তাদের গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনতে হবে যথেষ্ট ভাবে।
      সে সম্মেলন- টা তাই ছিল যথেষ্ট গুরুত্ব পূর্ণ। কারণ ওতে তথ্য ভিত্তিক নিরিখে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনে কোন দেশ কতটা তৎপর তার একটা পরিস্কার ছবি ফুটে উঠত। এবং না করার জন্য কি কি শাস্তির খড়গ হাতে নেওয়া হয়েছিলো তারও একটা হিসেব পাওয়া যেত।
      দুঃখের বিষয়... ওই সম্মেলনে তেমন কিছুই হয়ে ওঠে নি।

                   (c) ছবি এবং

কোন মন্তব্য নেই: