“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

আমার নীল উচ্চারণ


সাত ভাইয়ের চম্পা কোনদিন ফুল হতে পারেনি। আজন্ম শাপগ্রস্থ ফুলেদের দেখে অভিসম্পাত দিয়ে উজাড় করলো পৃথিবীর সব সুন্দর সৃষ্টিকে। কালো প্রজাপতিরা ছিল সাক্ষী। আমার আকাশেও তুমি এমনটাই। চম্পা ফুলের মতো আমার ভালোবাসার জগতে আনাগোনা তোমার।
অপূর্ব শরীরী গন্ধ ফরাসী পারফিউমকেও লজ্জা দেয়। আমি চোখ পেতে দেখি সাদা বোতলে ফরাসী তরলে দ্রবীভূত জীন মাথা ঠুকরে কাঁদছে।
যেমনটা মরে নদীর মিঠে পানি প্রতিদিন সমুদ্রের নোনা জলের গর্তে। সমুদ্রের কাছে দাড়িয়ে যে হুঙ্কার তুমি শোন তা সেই মিঠে জলের ভাষা আর নিজের শরীরকে ছাড়িয়ে নেয়ার গর্জন। মিল খায়না।
নোনতা শরীরের সাথে মিষ্টি ঘামের সুবাস।
জলের বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় এক অনু অক্সিজেন আর দুই অনু হাইড্রোজেন। কিন্তু মিঠে আর নোনা ঘামের সমীকরণ কি?
প্রমের সমীকরণ কি? আমার ভালোবাসার সমীকরণ কি? মৃত্যুর সমীকরণ কি?
তুমি যদি জিজ্ঞেস করো কেন তোমায় ভালোবাসি আমি বলতে পারব না কোন কারণ।
তবে আমার ঘামের গন্ধ চিনে তুমি বলে দিতে পারবে আমার প্রেমের কথা।
প্রেমের রসায়নাগারে চম্পা ফুলের কাটাছেঁড়া করার কারণে এই সুযোগ তুমি পেলেও পেতে পারো। আমার আফটার শেভ লাগানো গালে একবার চুমু খেয়ে দেখো, লাভ তোমারই হবে। সাক্ষী করলেও করতে পারো আমার প্রিয় আফটার শেভকে। তোমার গন্ধ চেনে। তুমিও চেন তাঁকে আমার থেকে বেশী।

বেঠোফেনের সিম্ফনি আর আমার ঘামের গন্ধের কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্ভব নয়। স্বরলিপি তোমার যেমন জানা নেই সেই সঙ্গীতের, তেমনি আমার ঘামবিন্দুর সাথেও তোমার প্রেমের কোন কেমিস্ট্রি মিলবে না পৃথিবীর কোন রসায়নাগারে। তবে তোমার মনের অন্দরমহলে এই প্রেমের মূর্ছনা অবিরত চলছে। তুমি অভিশপ্ত হয়েই থেকে যেও। প্রেম থেকে যাক আমার কাছেই আফটার শেভ হয়ে বা কোন ফরাসী পারফিউম হয়ে বোতলবন্দী।

তোমার সুখ এতেই। আমার সুখ তোমার পাশে পাশে ঘুরে অথবা অভিশপ্ত চম্পা ফুলেদের দিকে তাকিয়ে।
আকাশবাতি হয়ে স্বরলিপিহীন সঙ্গীতের মূর্ছনা শেষে সমুদ্র সিম্ফনিতে ডুব দিয়ে তোমায় খুঁজব। তুমি শুধু দেখবে তাকিয়ে, আমি নীল রক্ত হয়ে অবগাহন করবো তোমার শরীর। বেঁচে থাক তোমার স্বপ্নসুখ, অসম্ভব সুন্দর কোন রাতপাখি হয়ে।
স্বাধীনতার সূর্য তোমার ভালোবাসার ঘরে উঁকি মেরেছে। দেখোতো, হাঁসফাঁস করছে কিনা, আজ সকালের আলো তোমার দুই বুকের সন্ধিতে! তোমার ঘরে তো তুমিই শ্বাস নিতে পারোনা।

হায়রে স্বাধীনতা। অবশ অলস একটা দিনযাপন, অন্যদিনের চেয়েও বেশী সতর্ক। চুন থেকে পান খসলেই টান পড়বে চুলের মুঠিতে। আমি চেয়েছিলাম তোমার বিনুনীতে গোঁজা শেষ রক্তকরবীর পাপড়ি। দাওনি, এখন নিজেই কুটিকুটি করে ছিড়ে ফেল পরাধীনতাকে উপহার দেবে বলে। এখন বোঝ ভালোবাসা কারে কয় সখী, যাতনা কাহারে কয়...।
তবে আমি বলি শুধু ভালবাসাবাসি, সে শুধুই যাতনাময় নয়তো।

আমার নীল উচ্চারন। এসো খেতে বসি এবার, পান্তার সাথে শুকনো লঙ্কা আর আম কুচি চটকে দাও আমায়। ঠাণ্ডা করি কলিজা।

এসো শেষ বিকেলের পড়ন্ত স্বাধীনতার সূর্যের সাথে মিতালি করে রাতের আকাশ দেখি। আমার চম্পা ফুলের ভালবাসায় তোমার দীর্ঘশ্বাস, ভালো থেকো।

কোন মন্তব্য নেই: