“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২

রূপসার বুকে কাঁপন


প্রেম আপাতত নিহত, তা বলার কোন কারন নেই। হাত থেকে দস্তানাটা খুলে ফেলে দাও, দেখবে চুমু খেয়ে গেছে কোন বাবুই পাখি।
আজকাল তোমার বুকের রঙ পাল্টে গেছে। তাই মনের রঙেও নতুন রঙ লেগেছে জানি। সেই রঙে কোন নিহত প্রেমের কাব্য লেখা হয়তো সম্ভব নয়, তাই ভাবলাম ভালোই আছো। পিঙ্গল কোন ফুলের কাছেই লিখলাম তোমার কথা।
জানি হাজার নীলাভ চোখ হয়তো এখুনি বাষ্পরুদ্ধ হয়ে উঠবে প্রেমে অথবা অপ্রেমে।
যেদিন আমি থাকবো না সেদিন তুমি অনেকদূরে, মনে পড়া ছাড়া আর কোন পথ হয়তো থাকবে না। তবে সেটা আজকের চেয়েও বেশি কষ্টকর। তোমার কথা।
কবেই বা ছিলে!
আজকাল বাম চোখটা খুব লাফাচ্ছে জানো! সবাই বলে পুরুষের বাম শরীর কাঁপলেই বিপদ। আমি জানি আমার বাম দিকটাই বেশী প্রিয় তোমার। আর তোমার বাম হৃদয় আমারই ছিল। মনে আছে কথা দিয়েছিলে কোনদিন কাউকে স্পর্শ করতে দেবেনা সেই বুকে।
বাবুই পাখি এসে দেখে গেল তো চুপটি করে! তখন তুমি স্নানে ছিলে।
একটা ঝাঁঝালো রক চলছিল। নিওন আলো সম্পর্কিত। তাই টের পাওনি বাবুই পাখির আসা যাওয়া।
আজ একটা নারকেল ভেঙ্গেছি। কিছু তিল ভেজেছি লোহার কড়াইয়ে। হাত অম্বল খাবো বলে। বড্ড গরম আজকাল। শীতল হওয়ার খাদ্য। তোমার প্রিয় কালো তিল। তিল গুলি ভাজতে ভাজতে কাঠের উনানে মনে হয়েছিল, সেগুলি লাল হয়ে যাচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে বর্ণ। ঠিক তোমার বিশেষ কোন মুহূর্তের মতোই।
লোহার কড়াইয়ে, আগুনের আঁচে আমার প্রিয় শরীর, তোমার নিষিদ্ধ তিল। যাকে স্পর্শ করার আমার কোন অধিকার ছিল না কোনদিন, আজও নেই। তাই পাল্টে দিলাম সেই রঙ। এখন নিজের হাতে ছুঁয়ে দ্যাখো, আমারই মতো পুড়ছে সে। আর থাকতে চাইছে না তোমার শরীরে লেপ্টে।
দস্তানাটা খোল। এরপর আমার সামনে এসে দাঁড়াও। শেষবার তোমাকে জানান দেই, আমিও ভালো নেই। তুমিও না।
চলো ঘুড়ির মাঞ্জা বানাই। কাল বিশ্বকর্মা পূজা। গত বছর এই দিনটাতে তোমার ঘুড়ি কেটে দিয়েছিলাম আমি। এই ছাদ থেকেও স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলাম তোমার কষ্ট। তোমার আকাশ হওয়ার স্বপ্ন এক সেকেন্ডে ভোকাট্টা হতে দেখে পাল্টে যায় তোমার চোখ। তারই জেদ, আমাদের প্রেম। আজ সব ভোকাট্টা।
চলো আরেকটা ঘুড়ি উড়িয়ে দেই, কথা দিলাম আর কাটবো না। সেই সুতোয় গেঁথে দেবো বকুল ফুল। সুতো টানলেই পেয়ে যাবে আমার দখল। চেয়ে দেখো হলুদ, নীল প্রজাপতিরা উড়ে বেড়াচ্ছে তোমার আকাশে। ছুঁয়ে দেখো একবার।
ওরা সেজেছে আজ তোমারই জন্যে। হঠাৎ বৃষ্টির কোন সংকেত নেই আপাতত। তাই ভিজবে না তুমি কোনদিন।
অন্যথায় দরজাটা খুলে দাও, বাবুই পাখিকে অধিকার দাও আরেকবার চুমু খাওয়ার, বাতাস কে পাঠাই এবেলায় তোমার মনের হদিস পেতে। শেষ বেলায় না হয় আমি যাবো।
সন্ন্যাসী বসন্ত। কিছুতেই হেলে যায়না অবরুদ্ধ দ্বার।
নির্মল শরৎ শান্ত ধীর স্থির। জোনাকিরা কাশ বনে ঘুরে বেড়ায় একাকি নিঃসঙ্গ। নগরীর নটী চলেছে রূপসার পাশ দিয়ে। ভেসে আসে নুপুরের ঝমঝম শব্দ। আমার নেশা রূপসার বুকে, ছলাৎ ছলাৎ লাফায় বুকের ভেতর গঙ্গোত্রীর জল। তুমি দেবী কাঠুরিয়ার।
আমার ভয় হয় জানো...।

কোন মন্তব্য নেই: