“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৩

অনুভব তুলসীঃ অসমিয়া কবিতার অন্যতম যুবরাজ

অনুভব তুলসী
নুভব তুলসী। অসমিয়া কবিতার অন্যতম এই যুবরাজকে প্রথম দেখি আট বছর আগের একদিন আগরতলার Poetry Confluence অনুষ্ঠানে। তারপর ইটানগর, ত্রিপুরা, গুয়াহাটিতে সাহিত্য অকাদেমি, ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট্রের বিভিন্ন পোয়েটস মিট অনুভবদার সঙ্গে বন্ধুত্বকে আরও তীব্র করে তোলে। অলোকরঞ্জন যেমন লিখেছিলেন, পাখিটির মাতৃভাষা চেয়ে থাকা, তেমনি অনুভব তুলসীরও কিরাতপ্রতিভা, মিটিমিটি হাসি। অনুভবদার মোহিনী পাঠিকাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য, ওড়িয়া ভাষার কবি মানসরঞ্জন মহাপাত্র ছাড়া আর কারও কাছে নেই। কবি নীলমণি ফুকনের পর সমীর, নীলিম, নীলিমা, জীবন, লুৎফা, অনুভবদের হাতে অসমিয়া কবিতার ধারা নিরীক্ষালালিত হয়ে বাঁক নিয়েছে সৌরভ, কুশল, প্রণবদের হাতে। আখমাতোভা, হাইনে, ভাস্কো পোপা, পাজ, রিলকে, গালিব অনুবাদ করে অসমিয়া ভাষার পাঠকদের মননে অনুভব তুলসী বইয় দিয়েছেন এক দরজাখোলা নদী । গুয়াহাটি পৌঁছে নৈশ শিস দিলেই জয়ানগর বাঙ্কার থেকে অনুভবদা বেরিয়ে পড়েন তার গাড়ি নিয়ে। তারপর শুরু হয় আমাদের যৌথ নাশকতা কর্মসূচি। ২০১১তে ভারতীয় প্রতিনিধি এই ভ্রমণকামুক ঘুরে এলেন অরহান পামুকের দেশ। অনুভবদার পেরেকে রক্তাক্ত হয়ে উঠি তবে?


পেরেক
..........

সেই হিংস্র লোকগুলো
তাদের হাত ভিজিয়েছিল
যিশুর লাল, উষ্ণ
রক্তে

নিতান্ত অকারণেই
ক্রুদ্ধ জনতা
তাদের অভিশাপ ঢেলে দিয়েছিল
পেরেকগুলোর ওপর--
আর পেরেকগুলো সহ্যও করেছিল সব

লোকগুলো সম্পূর্ণ নিশ্চিত ছিল
যে ওই পেরেকগুলো নির্ঘাৎ পচে মরবে
নরকের অতল গহ্বরে

অনিঃশেষ নৈঃশব্দ্য
হিঁচড়ে টেনে এনেছিল
তিন-তিনটে কালো রাত

অবশেষে একসময়
ঘড়ি ঘোষণা করল
ভোর

রোদের প্রথম রশ্মিগুচ্ছ
প্রত্যক্ষ করল সেই
অলৌকিক ঘটনা

হঠাৎই ক্ষয়ে নিঃশেষ হয়ে গেল
শবাধারের সব ক-টি
কাঠের পাটাতন

শুধু পুনর্জন্ম হল
সেই পেরেকগুলোর...

......

-মন্দাক্রান্তা সেন অনূদিত
বৃষ্টিদিন। বইমেলা সংখ্যা। ১৪১৫

কোন মন্তব্য নেই: