“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

দেখে এলাম সিল্ক রুট (স্টিল ওয়েল রোড)


                                                               ।।আশু পাল।।     


     বহু আগেই প্রয়াত শিলচরের ডাক্তার সুর সেন (পোষাকি নাম বোধ হয় ছিল সুরজিত সেন) সেই কালে নামকরা সার্জন ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তাঁকে উজান আসামের বিভিন্ন সেনা হাসপাতালে কাজে লাগায়। আমার বাবা তখন ছিলেন তাঁর সহযোগী। বাবার মুখে আমাদের ছোটবেলাতেই গল্পের সুবাদে নাম শুনেছি, ডিগবয়, মার্ঘেরিটা, লিডু, লেখাপানি, বগাপানি, টিরাপ, জয়রামপুর ইত্যাদি আরও কত কী। সব ক'টা নাম এখন মনেও নেই। আসার সুযোগ হয়নি কোনদিন। আগস্ট সংক্রান্তির দিনে (শ্রাবণ সংক্রান্তি, চৈত্র সংক্রান্তি হতে পারলে আগস্ট সংক্রান্তি হতে অসুবিধা কোথায়) সকাল সকাল আমার যান্ত্রিক ঘোড়ায় চেপে বসলাম। 'চল্‌ পানসি বেলঘরিয়া'। তিনসুকিয়া থেকে আমার সহকর্মী হিফজুরকে তুললাম পেছনে। একের পর এক, মাকুম, বগাপানি, ডিগবয়, মার্ঘেরিটা, লিডু, লেখাপানি পেরিয়ে জাগুন-এ গিয়ে ক্ষান্তি দিলাম।
          জাগুন থেকে দুটো রাস্তা। একটা গেছে মিয়াও, অপরটা জয়রামপুর। দুটোই অরুণাচল প্রদেশে। জাগুন আসামের শেষ শহর। লেখাপানীর সেনা ছাউনীর ভিতরে, রাস্তা থেকে বেশ একটু দূরে, দেখা যাচ্ছিল, লম্বা আসাম টাইপ ঘরের চালে রেডক্রস আঁকা। এক লহমার জন্য আনমনা হয়ে পরেছিলাম। সেই ১৯৪২-৪৩ সালে আমার বাবা হয়তো এদিক দিয়ে কত্তবার হেঁটে গিয়েছেন। একটা তথ্য শেয়ার করতে চাই। মাকুম পেরোনোর পর, প্রায় ৬ কিলোমিটার পর একটা রেল ক্রসিং। গ্রামটার নাম নগাঁও। সেখান থেকে টিংরাই স্টেশন পর্যন্ত টানা ১১৯০০ মিটার রাস্তা একদম স্কেল দিয়ে রুল টানা সরল রেখায়। আমার মনে হয়, আসামে এর চেয়ে বেশি লম্বা সরল রৈখিক রাস্তা আর নেই। সকাল ৮ টায় বেরিয়ে ২৮৩ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বাড়ি ফিরেছি। দেখে এলাম সিল্ক রুট (স্টিল ওয়েল রোড)
বুড়ি দিহিং নদীর উপর সেতু। মার্ঘেরিটা।
জাগুন তিনি আলি। আসামের শেষ শহর। ডান দিকের রাস্তা চলে গেছে জয়রামপুর। বাঁ দিকেরটা মিয়াও। জয়রামপুরের রাস্তাটাই ঐতিহাসিক স্টিলওয়েল রোড।

























বুড়ি দিহিঙ্গের উপর রেল সেতু। মার্ঘেরিটা।

জাগুন তিনি আলি। আসামের শেষ শহর। ডান দিকের রাস্তা চলে গেছে জয়রামপুর। বাঁ দিকেরটা মিয়াও। জয়রামপুরের রাস্তাটাই ঐতিহাসিক স্টিলওয়েল রোড।
সবুজ আর ধূসরের সহাবস্থান। একদিকে চা বাগান, আর পেছনে "ওপেন কাস্ট" টিরাপ কয়লা খনি থেকে তোলা বর্জ্যের পাহাড়।
চাওলুং ছ্যুকাফা বাটচরা। লেখাপানী। বিশাল এলাকা নিয়ে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে উৎসব প্রাঙ্গণ। কিন্তু সব ধূ ধূ।
বুড়ি দিহিঙ্গের উপর রেল সেতু। মার্ঘেরিটা।

কোন মন্তব্য নেই: