“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ধর্মের বোতল? ধর্মান্তরিত জলের-বোতল!

।। পার্থঙ্কর চৌধুরী।।

স্থান, চৌরঙ্গি, শিলচর শহর। ২০১৪। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ। সময় আনুমানিক সকাল ১০টা। দামী ‘ব-লে-রো’ গাড়ি। নম্বর-প্লেট WB দিয়ে শুরু; বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এটা পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা। ‘কৃষ্ণ বলো- আগে চলো’। সামনে-পিছনের বাম্পারে বলিষ্ঠ অক্ষরে লেখা। আপাততঃ স্তব্ধ গাড়ি। ভিতরে কেউ বসা নেই।  মিনিট খানেক পর নাক থেকে কপালের পুরোটা জুড়ে তিলক কাটা বছর ২৩-২৪ বছরের এক তরুণী ভক্ত দেখা গেলো। এর আরও এক মিনিট পর ঐ একই  উঠতি বয়সের তরুণ ভক্ত। দুজনেই স্তব্ধ গাড়ির এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করছে।
এর আরও দু মিনিট পরের ঘটনা।
          গাড়ির দরজা খুলে নিমিষে ৩-৪ টা জলের বোতল ছুঁড়ে ফেলা হল, পরিস্কার রাস্তায়, হরিদাস-বাবুর পাড়ায়।  
            আরও এক দেড় মিনিট পর…!
          দাড়িওয়ালা মুসলমান এক রিকশাওয়ালা যাচ্ছিলো ঐ পথ দিয়ে। ফেলে দেওয়া খালি বোতল-গুলো দেখে দাঁড়ালো একটু। নিমিষে বোতল গুলো তুলে নিল। রিক্সার সীট খুলে সে জায়গায় পুরে নিল বোতল গুলো। পুরো ব্যপারটাই ৩-৪ মিনিটে সম্পন্ন হল।
         যে বাস্তব ঘটনাটা এই মাত্র বললাম, সেটা তেমন বড় কোনো ঘটনা নয়। অন্ততপক্ষেঃ আমাদের এই শহরে। চারদিকে যেরকম ধর্মা-ন্তি-করন নিয়ে  হাল্লা, চিৎকার, প্রতিবাদ- প্রসঙ্গ হচ্ছে, তাই জিগ্যেস করতে ইচ্ছে হল, (বোতলকে  Personify-করে), এই ‘বোতলের ধর্ম’  পরবর্তীতে কী হবে’?
         নিজের অজান্তে যে বোতল গুলো ধর্মা-ন্তি-রত হয়ে গেলো… তা নিয়ে কেউ কি গেলো-গেলো রব তুলবে না? আর, পরিবেশ-প্রসঙ্গ কি একে বারেই বাদ…? বাদ দিয়েই কি প্রগতির ‘ব-লে-রো’ আগে চলবে…?’

সংবেদনশীল-দের প্রতীকী এই ঘটনা, কিছু ভাববার খোরাক দিচ্ছে কি…?  

কোন মন্তব্য নেই: