“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০১৫

মুক্তি

(C)Image:ছবি























।। শিবানী দে।।

সারাদিন কার্যাকার্য সম্পাদন শেষে  ঘরে ফিরে
তুমি অনুযোগ কর, আমি কেন কথা বলছি না ।
গোটা দিন ঘরকন্না---হাতাবেড়ি তেলনুন ঝাড়াপোঁছা সার,
ঝিয়ের পেছনে লাগা, সন্তানের দেখাশোনা, দোকান বাজার----
এইসব ক্ষুদ্র কাজে আকণ্ঠ নিমগ্ন আমি বেচারি গৃহিণী----
তুমি ভাব, সন্ধ্যাবেলা কথা বলে মুক্তি দেবে। কিন্তু জান না তো,
মানবীও মুক্তি তার খুঁজে নেয় আকাশে তাকিয়ে ।
তাই গোধুলিমলিন হলে আবর্তনক্লান্ত এই পৃথিবীটা,
সন্ধ্যার আকাশ নিজ নীলাভ শরীরে মেখে কমলা বরণ
যে অপূর্ব আভা দিয়ে মুছে দেয় সব মলিনতা তার,
সেই আভা  স্নানশেষে আমারো মুখের 'পরে পড়ে ।
আমার ঠাকুরঘরে শঙ্খধ্বনি অনুসৃত হয়ে
বুকের ভিতর রুদ্ধ সারাটা দিনের বাষ্পবায়ু
নিঃশেষে বেরিয়ে যায় । তারপরে বুক ভরে
যখন নিঃশ্বাস নিই সায়াহ্নের জুড়োনো বাতাসে,
তখন আমার আর বার্তালাপে বাসনা থাকেনা ।
কথা তো সাজানো সব । মুখরোচক আসলে নকলে ।
মনের কথাটি আর কেই কবে বলতে পেরেছে?
তারচেয়ে এই ভাল আকাশের মুখোমুখি বসা,
অন্ধকারে নক্ষত্রের ফুটে ওঠা সারগর্ভ বাণী ।

কোন মন্তব্য নেই: