“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫

আয়স কাল ০৭


(দক্ষিণ আফ্রিকীয় লেখক জে এম কোয়েটজি-র লেখা 'এজ অব আয়রন'- উপন্যাসের  বাংলা অনুবাদের সপ্তম  ভাগঃ -- শিবানী দে )

(C)Image:ছবি



খন থেকে  ভারকুয়েইল আমার টাকা নিয়েছিল, তখন থেকে অনবরত মদ খেয়ে চলেছে, শুধু ওয়াইন নয়, ব্র্যান্ডি ও । কোনো কোনো দিন দুপুরবেলা পর্যন্ত সে মদ খায় না ।  কিন্তু সেই কয়েক ঘণ্টার সংযম পরে  প্রচণ্ড রকম খেয়ে পুষিয়ে নেয় । বেশির ভাগই সে মাঝসকালেই বেরিয়ে  গিয়ে মদে চুর হয়ে ফেরে ।

আজকে দুপুরবেলা রোদ যখন খুব চড়া বেরিয়েছেসে বাইরে থেকে ফিরল । আমি উপরতলার ব্যাল্‌কনিতে ছিলাম, সে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে উঠোনে বসল, কুকুরটা তার পাশে, আমাকে দেখতে পায়নি । ফ্লোরেন্সের ছেলেটা আগে থেকেই সেখানে ছিল, সঙ্গে আরো একটা ছেলে, যাকে আগে কখনো দেখি নি । হোপ ও সেখানে আছে, ছেলেগুলোর প্রত্যেকটা চলন নজর করছে । ওরা একটা রেডিও খুলেছে, তাতে  ধাতব জিনিষ ভাঙ্গার মত এবং সঙ্গে সঙ্গে ধুপধাপ করার মত যন্ত্রসঙ্গীত জোরে বাজছে : মনে হচ্ছিল এর চাইতে টেনিস বলের ধুপধাপ ঢের ভাল ।

ভারকুয়েইল ছেলেদের ডেকে বলল, 'জল, আমাকে অল্প জল দাও ।'

নতুন ছেলেটা উঠোনের মাঝ দিয়ে এসে লোকটার পাশে উবু হয়ে বসল । কিছু বলাবলি হল কিনা আমার কানে পৌছোয় নি । ছেলেটা একটা হাত বাড়িয়ে বলল, 'দাও ।'

ভারকুয়েইল অলসভাবে তার হাতটা নামিয়ে দিল ।

ছেলেটা বলল, 'ওটা আমাকে দাও ।' হাঁটুতে ভর করে বসে ভারকুয়েইল-এর পকেট থেকে বোতলটা টানতে শুরু করল ।

ভারকুয়েইল বাধা দিচ্ছিল, কিন্তু দুর্বলভাবে ।

ছেলেটা বোতলের ছিপি খুলে সমস্ত ব্র্যান্ডি মাটিতে ফেলে দিল । তারপর বোতলটা একধারে ছুঁড়ে ফেলল, বোতল ভেঙ্গে গেল । আমি প্রায় চেঁচাতে যাচ্ছিলাম, 'বাজে কাজ হচ্ছে ।'

ছেলেটা বলল, 'মদ তোমাকে কুকুর বানিয়ে ফেলছে । তুমি কি কুকুর হতে চাও ?'

ভারকুয়েইল-এর কুকুরটা যেন রেগে গিয়ে কুঁইকুঁই করতে লাগল ।

ভারকুয়েইল ভারি জিভে বলল, 'জাহান্নামে যাও ।'

ছেলেটা বলল, 'কুকুর ! মাতাল !'

সে বীরদর্পে পেছন ফিরে ভেকির কাছে গেল । 'কি আত্মম্ভরি ছেলে, নিজেকে কি ভাবে!' আমি ভাবলাম । 'যদি দেশের নতুন অভিভাবকেরা এইরকম আচরণ করে, তাহলে ঈশ্বর ওদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন ।'

বাচ্চা মেয়েটা ব্র্যান্ডির গন্ধ শুঁকে নাক কোঁচকাল ।

'তুইও জাহান্নামে যা,' ভারকুয়েইল তার দিকে  হাত নেড়ে বলল । মেয়েটা নড়ল না । তারপর সে হঠাৎ উঠে দৌড়ে তার মার কাছে চলে গেল ।

বিরক্তিকর সঙ্গীত বাজতেই থাকল । ভারকুয়েইল ঘুমিয়ে পড়ল দেওয়ালের দিকে পিঠ দিয়ে, আর তার হাঁটুর উপর মাথা রেখে কুকুরটা শুয়ে পড়ল । কিছুক্ষণ পর সূর্য মেঘের আড়ালে চলে যাওয়াতে আবহাওয়া ঠাণ্ডা হয়ে গেল। একটু একটু বৃষ্টি পড়তে লাগল । কুকুরটা উঠে শরীর ঝেড়ে চালার নিচে চলে গেল । ভারকুয়েইল ও পায়ের উপর উঠে দাঁড়িয়ে কুকুরটাকে অনুসরণ করল । আমিও আমার জিনিষপত্র গোছালাম ।

চালার ভেতর থেকে বেশ গণ্ডগোল শোনা গেল । কুকুরটা প্রথমে ছুটে এল মাথা নিচু করে, তারপর ডাকতে থাকল । তারপর ভারকুয়েইল পিছপা করে বেরিয়ে এল । ছেলেদুটোও বেরোল ভেকির বন্ধু দ্বিতীয় ছেলেটা কাছে আসতেই ভারকুয়েইল তার ঘাড়ে এক থাপ্পড় কষাল । ছেলেটা চমকে গেল, এমন কি ব্যালকনি থেকে আমিও শুনতে পেলাম । ছেলেটাও ভারকুয়েইলকে মারল, ভারকুয়েইল হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবার উপক্রম । কুকুরটা নাচতে নাচতে কাঁউ কাঁউ করতে থাকল । ছেলেটা ভারকুয়েইলকে আবার মারল, এবার ভেকিও তাকে মারতে এল । 'বন্ধ কর এসব,' আমি চেঁচালাম । তারা আমার কথায় কান দিল না । ভারকুয়েইল মার খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল, তারা তাকে লাথি মারতে থাকল । ভেকি এবার কোমর থেকে বেল্ট খুলে মারতে থাকল । আমি চেঁচালাম, 'ফ্লোরেন্স, এদের বারণ কর ।' ভারকুয়েইল নিজেকে রক্ষা করার জন্য হাত দিয়ে মুখ ঢাকল । কুকুরটা লাফিয়ে ভেকির দিকে গেল, ভেকি তাকে পেছন দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে লোকটাকে বেল্ট দিয়ে চাবকাতে থাকল । আমি রেলিং ধরে আবার চেঁচিয়ে বললাম, 'তোমরা দুজন এসব বন্ধ কর । এক্ষুনি বন্ধ কর, নইলে পুলিশে খবর দিচ্ছি ।'

তখন ফ্লোরেন্স বেরোল । সে ছেলে দুটোকে ধমক দিল, ওরা সরে গেল । ভারকুয়েইল কোন মতে উঠে দাঁড়াল, আমিও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিচে নামলাম ।

ফ্লোরেন্সকে জিগ্যেস করলাম, 'এই ছেলেটি কে ?'

ছেলেটা ভেকির সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে আমার দিকে তাকাল । তার উদ্ধত, মারকুটে ভঙ্গী আমার মোটেই ভাল লাগল না ।

ফ্লোরেন্স বলল, 'ভেকির স্কুলের বন্ধু ।'

আমি বললাম, 'এ নিজের বাড়িতে চলে যাক । আমার এসব খুব বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে । আমার বাড়ির উঠোনে এসব মারামারি আমি পছন্দ করি না । আর অপরিচিত লোকেরা আমার বাড়িতে আসতে যেতে থাকুক এটাও আমি চাই না ।'

ভারকুয়েইল-এর ঠোট থেকে রক্ত পড়ছিল । ওর চামড়া-সর্বস্ব মুখে রক্ত পড়াটা কেমন আশ্চর্যের, ঠিক যেমন ছাইয়ের উপর মধু ।

ফ্লোরেন্স বলল, 'ছেলেটা অচেনা নয়, এখানে বেড়াতে এসেছে ।'

ভেকি বলল, 'আমাদের এখানে আসতে কি পাস লাগবে ?' সে ও তার বন্ধু দৃষ্টিবিনিময় করল 'আমাদের কি পাস লাগবে ?' তারা আমাকে চ্যালেঞ্জ করে আমার উত্তরের অপেক্ষা করতে লাগল । রেডিওটা  এখনো চলছিল, ক্লান্তিকর যান্ত্রিক শব্দ । আমার মনে হচ্ছিল দুহাত দিয়ে কান দুটো চেপে ধরি ।

আমি বললাম, 'আমি তো পাসের কথা বলিনি । কিন্তু ওর কি  অধিকার আছে এখানে এসে এই লোকটাকে পেটানোর ? এই লোকটা এখানে থাকে । এই চালাটাই তার ঘর ।'

ফ্লোরেন্সের নাকের পাটা ফুলে উঠল ।

আমি তার দিকে ফিরে বললাম, 'হাঁ, এই লোকটাও এখানে বাস করে । কাজেই এটা ওরও বাড়ি ।'

ফ্লোরেন্স বলল, ' এখানে থাকে, কিন্তু ও তো একটা আবর্জনা । কোনো কাজের নয় ।'

ভারকুয়েইল বলল, 'তুই মুর ।'* সে নিজের টুপিটা খুলে সেটার উপর চাপড়াল । তারপর টুপিশুদ্ধ হাত তুলল যেন তাকে মারবে । আবার বলল, 'তুই মুর ।'

ভেকি তার হাত থেকে টুপিটা নিয়ে গ্যারেজের ছাদের উপর ছুঁড়ে ফেলল । কুকুরটা ভীষণ ভাবে ঘেউঘেউ করতে থাকল । টুপিটা আস্তে আস্তে গড়িয়ে নিচে পড়ল ।

'ও বাজে লোক নয়,' আমি গলার স্বর নিচু করে শুধু ফ্লোরেন্সের দিকে তাকিয়ে বললাম । ' আবর্জনা কেউই হয় না। আমরা সবাই মানুষ ।'

কিন্তু ফ্লোরেন্সের আমার উপদেশ শোনার মত ইচ্ছে নেই । সে বলল, 'কিছু না করে শুধুই মদ খায় । সারাদিন শুধু মদ গেলা, মদ গেলা আর মদ গেলা । আমি ওকে একদম পছন্দ করিনা ।'

লোকটা কি একেবারে অকম্মা ? হাঁ, হয়তোগুড ফর নাথিং, একটা পুরনো ইংরাজি কথা, আজকাল খুব কম শোনা যায় ।

আমি বললাম, 'লোকটা আমার বার্তাবাহক ।'

ফ্লোরেন্স আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকাল ।

আমি তাকে বললাম, 'ও আমার খবর নিয়ে যাবে ।'

ফ্লোরেন্স কাঁধ ঝাঁকাল । ভারকুয়েইল নিজের টুপিটা নিয়ে কুকুরটার সাথে টলতে টলতে বেরিয়ে গেল । আমি আবার বললাম, 'ছেলেদের বলবে ওর পেছনে না লাগতে । ও কোন ক্ষতি করছে না ।'


যেভাবে উঠতি বয়সের হুলোরা বুড়ো হুলোকে মেরে তাড়িয়ে দিলে সে কোথাও লুকিয়ে নিজের জখম চাটতে থাকে, ভারকুয়েইল ও তেমনি কোথাও চলে গেল । আমার মনে হল আমি পার্কগুলোতে গিয়ে ওকে আস্তে আস্তে ডাকি, মি ভারকুয়েইল! মি ভারকুয়েইল!, যেভাবে কোন বুড়ি তার বেড়ালকে খোঁজে ।

ফ্লোরেন্স অবশ্য গর্বিত যে তার ছেলে অকম্মা লোকটাকে তাড়িয়ে দিয়েছে, কিন্তু সে ভবিষ্যৎবাণী করেছে যে বৃষ্টি শুরু হলেই লোকটা আবার ফেরত আসবে । আমি বললাম, 'যতদিন ছেলেগুলো আছে, ততদিন সে আসবে কিনা আমার সন্দেহ আছে । তুমি  ভেকি ও তার বন্ধুকে শাস্তির তোয়াক্কা না করে বড়দের গায়ে হাত তুলতে শেখাচ্ছ । এটা কিন্তু ভুল । হাঁ, তুমি ওর সম্পর্কে যা-ই ভাব না কেন, ভারকুয়েইল ওদের বড় ।

'ফ্লোরেন্স, তুমি যতই বাচ্চাদের প্রশ্রয় দেবে, ততই তারা উগ্র ব্যবহার করবে । তুমি বলেছিলে যে তোমার ছেলের বয়সিদের প্রশংসা কর কারণ তারা কিছুতেই ভয় পায় না । সাবধান ! যে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে কাজ আরম্ভ করে, শেষ পর্যন্ত পরের জীবনকে  তুচ্ছ করতে গিয়ে তাদের বিনাশ হয় । তুমি তাদের যে কারণে প্রশংসা কর, তা সব সময় ভাল  না হতেও পারে ।

'সেদিন তুমি যা বলেছিলে, তার ব্যাপারে আমি মাঝে মাঝেই ভাবি , যে আজকাল আর মা বাবা নেই । আমার মনে হয় তুমি সে ভাবে বলোনি ।বাচ্চারা মাবাবা ছাড়া বড় হতে পারে না । এই যে শুনি জ্বালানো পোড়ানো, হত্যা, যা চলছে শোনা যায়, এই যে ভয়ঙ্কর বেপরোয়া ভাব, এই যে ভারকুয়েইলকে মারার ব্যাপারটা ----- শেষ পর্যন্ত এসব কার দোষ ? নিশ্চয়ই দোষ হবে সেইসব মাবাবার, যারা ছেলেদের বলে, 'যাও, তোমাদের যা ইচ্ছে কর । এখন তোমরা নিজেরাই নিজেদের মালিক ।তোমাদের হাতেই কর্তৃত্ব সঁপে দেওয়া হল ।' কোন বাচ্চা সত্যি সত্যি এরকম চায় ? সে তখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে, মনে মনে ভাবে, আমার মাথার উপর তো মা নেই, বাবা ও নেই, তাহলে মৃত্যুই হোক আমার মা, আমার বাবা । তোমরা বাচ্চাদের ব্যাপারে নিজেদের হাত ধুয়ে ফেল, আর ওরা মৃত্যুর সন্তান হয়ে যায় ।'

ফ্লোরেন্স মাথা নাড়ল । দৃঢ় ভাবে বলল, 'না ।'

'কিন্তু তুমি আমাকে গত বছর যা বলেছিলে, তা মনে পড়ে ? ফ্লোরেন্স, আমি শহরে ঘটা সেই অকথ্য অমানুষিক ঘটনার কথা বলছি । তুমি বলেছিলে, 'আমি একজন স্ত্রীলোককে দেখলাম, আগুনে পুড়ছে, আর সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে, আর ছেলেরা হাসতে হাসতে ওর  গায়ে আরো পেট্রোল ঢেলে দিল ।' তুমি বলেছিলে, 'আমি এরকম ঘটনা দেখার জন্য বেঁচে থাকব ভাবিনি ।' '

'হাঁ, আমি বলেছিলাম, এটা সত্য । কিন্তু ওদেরকে এত নিষ্ঠুর কারা বানাল ? এই সাদা চামড়ার লোকগুলো  হাঁ ।' সে আবেগের সঙ্গে জোরে জোরে শ্বাস ফেলছিল ।আমরা রান্নাঘরে ছিলাম । সে ইস্ত্রি করছিল । যে হাতে সে ইস্ত্রি করছিল, সেই হাত জোরে জোরে চাপছিল । আমার দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকাল । আমি তার হাতে মৃদু স্পর্শ করলাম । সে ইস্ত্রি উঠাল; বিছানো চাদরের উপর একটা হালকা বাদামি ছোপ ধরে গেছে ।

আমি ভাবলাম, দয়ামায়া নেই । দয়ামায়াহীন, সীমাহীন যুদ্ধ । এ যুদ্ধ চলতে থাকবে ।

আমি মৃদুস্বরে তাকে বললাম, 'কিন্তু একদিন তো তারা বড় হবে । তখন কি তারা এই নিষ্ঠুরতা ত্যাগ করবে ? তাদের মা-বাবারাই তাদেরকে শিখিয়েছিল, মা-বাবার যুগ চলে গেছে । তারা নিজেদের সন্তানকে কি শেখাবে ? মাতাপিতার আদর্শ, ভাবনাই যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে নতুন মাতাপিতার সৃষ্টি হবে কি করে ? ওরা একজন লোক মদ খায় বলে তাকে লাথি মারল, বেল্ট দিয়ে পেটাল । তারা মানুষের গায়ে আগুন লাগিয়ে হাসে । তারা নিজেদের বাচ্চাদের সাথে কি আচরণ করবে ? তারা কি ধরনের ভালবাসা দেবে ? আমাদের চোখের সামনে তাদের হৃদয় পাথর হয়ে যাচ্ছে, আর তোমরা কি বলছ ? তোমরা বলছ, এরা আমার সন্তান নয় । এরা সাদা মানুষের সৃষ্টি, কারণ এরা সাদা মানুষের বানানো দানব । এইটুকুই তোমরা বলতে পারছ । তোমরা সাদা মানুষের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেরা পেছন ফিরে থাকতে পার ?'

'না, না,' ফ্লোরেন্স বলল, 'একথা সত্য নয় , আমি আমার ছেলেমেয়ের দিকে পেছন ফিরে থাকি না ' সে চাদরগুলোকে একবার প্রস্থ অনুসারে, তারপর দৈর্ঘ্য অনুসারে ভাঁজ করল, প্রত্যেকটা কোণ একটা আরেকটার উপর একেবারে ঠিকঠাক পড়েছে । বলল, 'এরা সবাই ভাল ছেলে মেয়ে, তারা লোহার মতন । আমরা তাদের নিয়ে গর্বিত ।ইস্ত্রি করার টেবিলে সে এবার বালিশের ওয়াড়গুলোকে  পাতল । আমি তার আরো কথা শুনবার অপেক্ষা করতে লাগলাম, কিন্তু সে আর কিছু বলল না । আমার সঙ্গে তর্ক করার তার কোন ইচ্ছে ছিল না ।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
* মূর-- মরক্কো্র অধিবাসী । কিন্তু শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গদের গালি দিতে (কালো, অসভ্য অর্থে) শব্দটি ব্যবহার করে ।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


কোন মন্তব্য নেই: