“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ৭ মার্চ, ২০১৬

বসন্ত ধুলো ...চৌদ্দ



বেত্রবতী 

(C)Image:ছবি













।। চিরশ্রী দেবনাথ ।।
...............
বালিশ, বিছানা এবং কিছুটা
একান্ত মনখারাপ ছেড়ে
জানালা খুললো বেত্রবতী,
বসন্তকালীন রোদ ঢেকে দিল
তার ছোট স্তনখড়খড়ে কালো গাল,
শুকনো ঠোঁট, আর ঝড়ো চোখকে।
ঘুম ভেঙে যাওয়ার আগে
বেত্রবতীর এই শারীরিক রাজ্যপাট
নিগূঢ় বসন্তে অভিমানী থাকে....
বেত্রবতীর সব ব্রণ দাগ রেখে গেছে অবেলায়,
কৈশোর আছড়ে পরে বারংবার
নিঃসাড় একান্ত অভিসারে তারা সমুদ্র শুশুক..
বেত্রবতীর দিন ভালো লাগে না
রাত কেবলই রাত কেন হয় না এ জীবনে..
দীর্ঘ এক সানাই কেন বেজে যায় না নহবতে
তার সব নিজস্ব প্রেমেদের স্বয়ম্বর হতেই থাক..
গায়ে মাথায় মুখে বেত্রবতী মেখে নেয় অলীক সুখ ..
বিবাহিতা কেবলই বিবাহিতা তার এই অবৈধ বিলাস।
কারা যেন আঁশটে মুকুলগন্ধ লিখে যায়
ঋতুর ঘাটে ঘাটে পাত্র চাই বিজ্ঞাপনে,
 দিনশেষের রজঃস্বলাএই বসন্তযাপন
গা কুটকুটে অসহ্য ব্যথা, তাকেই কেন শুধু?
কিছু শিমূল, কিছু আবির বেত্রবতীর ঠোঁটে
একটি কামড় রেখে যাবে,
কথা হয়ে উড়ে গেছে সাতজন্ম পরে..
তাই দীর্ঘ, দীর্ঘ এই সব রাত
বেত্রবতীকে জেগে থাকতে হয়,
রূপং দেহি, রূপং দেহি, রূপং দেহি...
বেত্রবতী মা হয়, তার সব সন্তানেরা অযোনিসম্ভূত।
তাম্রবরণা বসন্তে বেত্রবতী ফুটতে থাকে
নিখাদ কালো দহন হয়ে...
জানালা বন্ধ করে দেয় বেত্রবতী
জন্ম, জন্ম এবং আরো
সাতজন্ম পর সে প্রিয়া হবে....

কোন মন্তব্য নেই: