“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

প্রজাতি উৎস সন্ধানে (প্রথম পর্ব)


 ।। রজত কান্তি দাস।।
(C)Imageঃছবি
বিবর্তনবাদ মানুষকে এক অলীক ও ধোয়াশাচ্ছন্ন স্বর্গলোক থেকে নামিয়ে এনে এই বিশ্বমাঝারে তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে সম্পর্কে সচেতন করে দিয়েছিল। ধর্মান্ধতা যেভাবে মানুষকে গবেষণাবিহীন ধ্যানধারণায় এক অস্বচ্ছ বাতাবরণের মধ্যে বন্দি করে রেখে দিয়েছিল তার থেকে মুক্তি লাভ করতে যে সব চিন্তাচর্চার প্রয়োজন তার মধ্যে বিবর্তনবাদ ছিল সব চাইতে উল্লেখযোগ্য। এই মতবাদ প্রাণীকুলের সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তা গড়ে তোলে জীবজগতের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সমগ্র জীবজন্তুর প্রতি আমাদের মনোভাবের পরিবর্তন ঘটাতে এক সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নিয়েছিল। তাই বিবর্তনবাদের আলোচনা এমন কি আজকের দিনেও সমান প্রাসঙ্গিক কারণ ধর্মান্ধতার যে উল্লাস আমরা দেখতে পাই তার থেকে মুক্তি লাভের প্রথম ও প্রধান উপায় হলো আমাদের নিজেদের সঠিক পরিচয় লাভ করে। নিজেদের ভালভাবে চিনতে পারার পরই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে আমরা চিনতে পারব বলেই আমার ধারণা।
 
বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্ব ও ছহাজার বছরের সীমিত সময় নিয়ে সমস্যা
মনে করা যাক একজন বিজ্ঞানী যিনি ধর্মমতে বিশ্বাস করেন, তিনি গবেষণা করতে গিয়ে এমন সব প্রমাণ পেয়ে গেলেন যা ধর্মমতের বিরুদ্ধে, তাহলে তিনি ধর্মমতের উপর বিশ্বাস হারাবেন নাকি বিজ্ঞানের উপর। সাধারণভাবে বলা যেতে পারে যে তিনি ধর্মের উপরই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন। কিন্তু এমন মানুষও আছেন যাঁর ক্ষেত্রে উল্টোটাই হয়েছিল। অর্থাৎ বাইবেলে যা লেখা আছে তা যে ভুল তার চাক্ষুষ প্রমাণ পাওয়ার পর এক বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের উপরই বিশ্বাস হারিয়ে ফেললেন কারণ তা ধর্মের বিরুদ্ধে ছিল। এই বিজ্ঞানীর নাম হলো নিকোলাস স্টেনো। যিনি বাইবেলের বিরুদ্ধে বই লেখার পর এতটাই অনুতপ্ত হয়ে গেলেন যে জীবনে আর বিজ্ঞানচর্চার ধার ধারেন নি। চার্চের পাদ্রী হয়ে বাকি জীবন বাইবেল পড়েই কাটিয়ে দেন। এক সময়ে তিনি উত্তর জার্মানিসহ সমগ্র স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের প্রধান পুরোহিত হয়ে যান। তবে তিনিই সম্ভবত প্রথম ব্যক্তি যিনি বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্বের কফিনে প্রথম পেরেকটি মেরেছিলেন। কোপার্নিকাস কিংবা গ্যালিলিও বাইবেলের ভুল ধরিয়ে দিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু সৃষ্টিতত্ত্বের বিরুদ্ধে কিছুই করেন নি। 
     চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ আবিষ্কারের প্রধান অন্তরায় ছিল এই যে ঐ সময়ে ইউরোপের মানুষ বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্বকে বিজ্ঞানের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে মনে করতেন। তাই বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্ব শুধু যে বিবর্তনবাদ আবিষ্কারের পথকেই কণ্টকাকীর্ণ করে রেখেছিল তা নয়, বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার উন্নতির ক্ষেত্রেও এই ধর্মীয় বিশ্বাস এক প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্ব হলো ঈশ্বর ছয়দিনে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড ও প্রাণিজগৎ সৃষ্টি করে সপ্তম দিন সকাল ৯টায় কাজ সেরে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তিনি প্রথম দিনে স্বর্গ, দ্বিতীয় দিনে আকাশ ও সমুদ্র, তৃতীয় দিনে স্থলভাগ ও উদ্ভিদ, চতুর্থ দিনে সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র, পঞ্চম দিনে নভোচর ও জলচর প্রাণী এবং ষষ্ঠ দিনে স্থলভাগের প্রাণী ও মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তবে মানুষ সৃষ্টি করার সময় ঈশ্বর তা করেছেন নিজের অবয়ব অনুযায়ী। অর্থাৎ ঈশ্বর দেখতে মানুষের মতো। তা তিনি যখন মানুষের মতো এবং তিনি এক ও অদ্বিতীয়, কাজেই প্রশ্ন আসে তিনি নারী না পুরুষ। এখানেও বাইবেল তার খেল দেখিয়ে পুরুষতন্ত্রের ধ্বজা উড়িয়েছে। তাই লিখেছে ঈশ্বর তাঁর অবয়ব অনুযায়ী আদমকে (পুরুষ) সৃষ্টি করেছিলেন এবং পরে আদমের সঙ্গিনী হিসেবে ঈভকে সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ ঈশ্বর পুরুষ। বাইবেল যে পুরুষ শাসিত সমাজের প্রতিভূ এটা তারই প্রমাণ। 
    লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই বাইবেলীয় ধারণায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডসহ উদ্ভিদ তথা প্রাণিজগৎ সৃষ্টির ধারণায় বিবর্তনের কোন স্থান নেই। কারণ সব কিছুরই সৃষ্টি হয়েছে মাত্র ছয় দিনে। তাই ক্রমবিকাশের তত্ত্ব যে সম্পূর্ণ বাইবেল-বিরোধী তা অনায়াসেই বলা চলে।
               যিশু খ্রিস্টের জন্মের ঠিক কতো বছর আগে এই পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছিল তা বাইবেলে স্পষ্টভাবে লেখা না থাকলেও আদি পিতা আদমের জন্ম সময়ের কিছুটা আভাস পাওয়া যায় অন্যভাবে। যেমন Book of Genesis ধর্মগ্রন্থে আদম থেকে নোয়া, মোসেজ হয়ে আরো অনেকের পর যিশু খ্রিস্ট পর্যন্ত যে বংশলতিকা লিপিবদ্ধ আছে তার থেকেই ধর্ম যাজকরা ছহাজার বছরের অনুমান করেন। এবং গির্জাগুলোর তরফ থেকে এই ধারণাই সমাজে প্রচার করা হয়। তবে কিছু কিছু পণ্ডিতের এই ছহাজার বছরও বেশি মনে হয়েছিল। ১৬৫৪ খ্রিস্টাব্দে একজন আইরিশ ধর্ম যাজক জেমস আসার যিশুর জন্ম-লতিকা গণনা করে সাব্যস্ত করেন ঈশ্বর জগত সৃষ্টি করেছিলেন যিশুর জন্মের ৪০০৪ বছর আগে ২৩ অক্টোবর সকাল ৯টায়। কিছুকাল পর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পণ্ডিত জন লাইটফুট নতুন ভাবে গণনা করে বের করেন আদমের জন্ম হয়েছিল ঐ একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে সকাল ৯টায়। দুজন পণ্ডিতেরই ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে গাত্রে ব্যথা হলেও তৎকালীন ইউরোপের ধর্মভীরু সমাজে ছহাজার বছরের ধারণা এক বদ্ধমূল সংস্কারে পরিণত হয়। এই বদ্ধমূল ধারণার মূলে আঘাত করতে না পারলে ক্রমবিকাশ তথা বিবর্তনের ধারণার জন্ম দেওয়া সহজ ছিল না।
      বিবর্তন ঘটে ধীর লয়ে যার জন্য কোটি কোটি বছরের ধারণা থাকা প্রয়োজন। তাই মাত্র ছহাজার বছরের সীমিত সময়ের মধ্যে প্রাণিজগতের বিবর্তনকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব ছিল না। তবে এই বিবর্তনের ধারণাটি ইউরোপীয় বিজ্ঞানী মহলে আসে যখন এই ছহাজার বছরের সীমিত ধারণার মধ্যে কুঠারাঘাত ঘটে এবং বিজ্ঞানীরা নানা ধরণের সূত্র ও প্রমাণ থেকে এক মহাকালের সন্ধান পেয়ে যানএই মহাকাল আবিষ্কারের মধ্য দিয়েই বিবর্তনের ধারণাও জন্মাতে থাকে এবং পরিশেষে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের জন্ম হয়। তবে এই মহাকালের সন্ধান দিয়েছিলেন ভূতাত্ত্বিকরা। মূলত ভূতাত্ত্বিকরাই ছিলেন বিবর্তনবাদের আদি গুরু। এর মধ্যে প্রথমেই যার নাম করতে হয় তিনি ছিলেন নিকোলাস স্টেনো। তবে স্টেনো তাঁর ভূতাত্ত্বিক গবেষণামূলক গ্রন্থ লেখার পর বুঝতে পারেন যে তিনি বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্বের কফিনে পেরেক মেরে দিয়েছেন। এই অনুসূচনা থেকেই তিনি বিজ্ঞানের সঙ্গে সমস্ত সংশ্রব ত্যাগ করে পাদ্রী হয়ে যান। তবে যে কুকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য তিনি জীবনভর মানুষকে বাইবেল শিখিয়েছেন। সেই কুকর্মের জন্যই মানব সভ্যতা আজও তাঁকে স্মরণ করে। 

নিকোলাস স্টেনো ও জীবাশ্মবিদ্যার সূচনা
            ঈশ্বর মাত্র ছয় দিনে এই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করে সপ্তম দিন সকাল ৯টায় কাজ শেষ করে বিশ্বাস নিয়েছিলেন। এই বাইবেলীয় ধারণা থেকেই ঈশ্বরের অনুকরণে খ্রিস্টান দেশগুলোতে ৬ দিন কাজ করে সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেবার প্রথা শুরু হয় এবং পরে তা সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই সৃষ্টিতত্ত্বের উপর প্রথম আঘাতটি হানেন এক ডাক্তার, যার নাম নিকোলাস স্টেনো। ১৯৬৬ সালে জড়বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের ইতিহাসে এক গভীর বিভাজন রেখা রচিত হয়েছিল। কারণ ওই একই বছরে একদিকে যেমন নিউটন জড় বিজ্ঞানে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলো করেছিলেন তেমনি ঐ বছরই বিবর্তনবাদেরও প্রথম বীজ রোপণ হয়েছিল। 
     আধুনিক ভূতত্ত্বের জনক যদিও নিকোলাস এগ্রিকোলা (১৪৯০-১৫৫৫) তথাপি জীবাশ্ম সংক্রান্ত প্রথম আবিষ্কারটি হয় ১৬৬৬ সালে তবে তা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছিল তার তিন বছর পর। সেই যুগে ইউরোপে বইয়ের নাম খুব দীর্ঘ হতো তাই ওই বইটির দীর্ঘ নামটি ছিল ‘Preliminary discourse  by Nicholas Steno concerning a solid body enclosed by a process of nature within a solid (একটি কঠিন বস্তুর আরেকটি কঠিন বস্তু দ্বারা আবৃত হওয়ার বিষয়ে প্রাকৃতিক ক্রিয়ার সম্বন্ধে নিকোলাস স্টেনো কর্তৃক প্রাথমিক আলোচনা।)লেখকের নাম বইটির মধ্যেই নিহিত আছে।
     ডেনমার্কের অধিবাসী নিকোলাস স্টেনো (১৬৩৮-১৬৮৬) ছিলেন একজন শল্যবিদ চিকিৎসক। ইতালির টাসকানি রাজ্যের রাজা দ্বিতীয় ফার্ডিন্যান্ডের বন্ধুত্ব লাভের সূত্রে তিনি রেনেসাঁর বিখ্যাত শহর ফ্লোরেন্সে বসবাস করতে শুরু করেন। তখনই টাসকানির পশ্চিম উপকূলবর্তী লিগুরিয়ান সমুদ্রে ১৬৬৬ সালে একটি বিশাল কুকুর হাঙর (Dog Shark) ধরা পড়ে। রাজা ফার্ডিন্যান্ডের আদেশে হাঙরটির মাথা কেটে আনা হলো এবং স্টেনোকে দায়িত্ব দেওয়া হলো মস্তকটি ব্যবচ্ছেদ করতে। এই ব্যবচ্ছেদ করতে গিয়ে স্টেনো হাঙরটির দাঁত দেখে অবাক হয়ে যান। কারণ ঠিক এই ধরণের বস্তু তিনি দেখেছেন বহু জায়গায়, বিশেষ করে মালটা দ্বীপে। ওই দ্বীপে এক ধরণের পাথর পাওয়া যায় যাকে বলে Tongue Stone অর্থাৎ জিহ্বা শিলা। কারণ পাথরগুলি দেখতে অনেকটা জিহ্বার মতো। এই পাথর নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে এক ধরণের বিশ্বাস চালু আছে যে সন্ত পল যখন মালটা দ্বীপে আসেন তখন কতকগুলো সাপ তাঁকে জ্বালাতন করায় তিনি তাদের কঠিন শিলায় পরিণত করেন যা ঐ জিহ্বা শিলা।
     স্টেনো বুঝতে পারেন যে আসলে ওই কুকুর হাঙরের দাঁতই বহু বছরে কঠিন শিলায় পরিণত হয়ে ওই জাতীয় শিলার সৃষ্টি করেছে। তিনি তাঁর গবেষণাপত্রে এই মত ব্যক্ত করেন যে এক সময় এই মালটা দ্বীপটি গভীর সমুদ্রে জলমগ্ন হয়ে ছিল এবং ক্রমে ক্রমে তা সমুদ্রের উপরে উঠে আসে। জলমগ্ন অবস্থায় হাঙরের দাঁত সেখানে পড়েছিল যা কঠিন শিলায় পরিণত হয়। এভাবেই নিকোলাস স্টেনোর হাত ধরে জীবাশ্মবিদ্যার যাত্রা শুরু হয় যার উপর ভিত্তি করে ডারউইনের বিবর্তনবাদ আজ দাঁড়িয়ে আছে।
      প্রায় তিন বছরের গবেষণায় স্টেনো আরও কতকগুলো জিনিস বুঝতে পারেন যা হলো সমুদ্রের তলায় পলির স্তর একসাথে জমা হয় না। বহু বছরের ব্যবধানে একেকটি স্তর পড়ে। এই স্তরগুলির প্রাচীনত্ব সমীক্ষা করার কিছু পদ্ধতিও তিনি আবিষ্কার করেন। অর্থাৎ একই সঙ্গে তিনি জীবাশ্মবিদ্যা (Paleontology), স্তরবিদ্যা (Stratigraphy) ও ভূস্তর সময়ানুক্রমবিদ্যার (Geochronology) সূত্রপাত করেন। এ ব্যাপারে তাঁর কোন পূর্বসূরি ছিল না কারণ নিকোলাস এগ্রিকোলার ভূবিদ্যা মূলত মণিকবিদ্যার (Mineralogy) মধ্যেই সীমিত ছিল। অর্থাৎ ভূবিদ্যার সূচনা হয়েছিল এক শল্যবিদ ডাক্তারের হাত ধরেই।
      নিকোলাস স্টেনো ভূস্তরের সমীক্ষা করার সময় তাঁর মনে বাইবেলীয় সৃষ্টিতত্ত্বের ধারণাই ছিল। কিন্তু সমীক্ষা করতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু পদ্ধতিরও উদ্ভাবন করেন যা আজ পর্যন্ত খুব বেশি পরিবর্তিত হয় নি। কিন্তু সমস্যা দেখা গেল অন্য জায়গায়। এই ভূস্তরের কাল নির্ণয় করতে গয়ে তিনি দেখেন যে ছহাজার বছরের সীমিত সময়ের মধ্যে এতটা স্তর জমতে পারে না। তাই তিনি এক মহাকালের সন্ধান পেয়ে যান যা তাঁর ধর্মবিশ্বাসে জোর আঘাত করেছিল। তাই বিজ্ঞানের উপর তিনি সমস্ত বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে বিজ্ঞানচর্চা থেকে চিরতরে বিদায় নিয়ে ১৬৭৫ সালে রোমান ক্যাথলিক ধর্মের যাজক হয়ে যান। এভাবেই নিকোলাস স্টেনো ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস ও বাইবেলীয় বিজ্ঞানের শহীদ হয়ে গেলেন। তবে স্টেনো শহীদ হয়ে গেলেও বিজ্ঞান কিন্তু শহীদ হয়ে যায় নি। পরবর্তীকালে বিজ্ঞান তার নিজস্ব গতিতেই এগিয়েছে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের হাত ধরে। এদের মধ্যে আমি আপাতত যে দুজনে নাম করতে চাই তারা হলেন রবার্ট হুক ও জেমস হাটন।

কোন মন্তব্য নেই: