“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭

সন্ধিসুধা

(C)Image:ছবি

।। অশোকানন্দ রায়বর্ধন।।

স্কুলপাঠ্য বইয়ে  সন্ধিবিচ্ছেদ অধ্যায়ে 'গো' বিষয়ক দুটো শব্দের সন্ধিবিচ্ছেদ করতে প্রায়ই ভুল করতাম ৷ গো + অক্ষ = গবাক্ষ এবং গো + এষণা = গবেষণা ৷  গবাক্ষ মানে জানলা ৷ গবেষণা মানে কোনো বিষয়ে নিবিড় অনুসন্ধান ৷ অর্থ যাই দাঁড়াক আমার সমস্যা ছিল সন্ধি বিচ্ছেদ নিয়ে ৷ তবে এই অর্থসূত্র ধরেই বাবা আমাকে এই দুটো শব্দের ব্যাপারে আমার সন্ধিবাতের বেদনার উপশমের উপায় বাৎলে দিয়েছিলেন ৷ গবাক্ষ শব্দের উৎস 'গো' 'অক্ষ' মানে গোরুর চোখ  থেকে ৷ আর 'গো' 'এষণা' অর্থাৎ গবেষণাকর্ম এতোই কষ্টকর যেটা ঠাডা দুপুরে গোরু খোঁজার মতো কষ্টকর ৷ প্রসঙ্গক্রমে একটা গল্পও শুনিয়েছিলেন ৷ গল্পটা এরকম - এক গৃহস্থ তার দুধেল গাভিটি হারিয়ে ভাদ্রমাসের রোদের মধ্যে বনবাদাড়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরে এলেন ৷ দাওয়ায় বসে কাতরস্বরে বউকে ফরমায়েশ দিলেন, এক ঘটি খাওয়ার জল দাও না গো, মা! রান্নাঘর থেকে গিন্নি গজগজিয়ে উঠলেন - মিনসের কী মাথাটাথা খারাপ হইছে নি কীকর্তা উত্তর দিলেন, ভাদোমাইয়া দুফরে গোরু হারাইলে কথার আগামাথা থাকে না রে বইন ৷ বলাবাহুল্য এর পরে আমার আর  এ দুটো শব্দের সন্ধিবিচ্ছেদে ভুল হয় নি ৷
         গোরুর আধার প্রযুক্ত হওয়ার প্রস্তাবে মনে হচ্ছে সন্ধিবিচ্ছেদের অধ্যায়ে আর একটা শব্দ যুক্ত হতে চলেছে ৷ শব্দটি হবে 'গো' + আধার = গবাধার ৷ গোরুর আধারকার্ডের এই নামকরণ যদি হয় না জানি কী পেরেসানিতেই পড়বে নতুন প্রজন্মের পড়ুয়ারা

কোন মন্তব্য নেই: