“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭

নিষাদ

।। রাজীব ভট্টাচার্য।।




 
(C) Image:ছবি
          গুন নিয়ে খেলা পছন্দ করে না অভ্র। 
          সে কোনোদিন বাজি পোড়ায় না । সুমনার একান্ত অনুগত হয়ে থাকাই তার পছন্দ ।
         একসময়ে লিটলম্যগ করা কবিতা প্রেমিক অভ্র । আজ সে সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত । উন্নত রুচির সাহিত্য-সংস্কৃতির বোদ্ধা ইংরেজির অধ্যাপক । কতো ডাক আসে তার বক্তৃতার জন্য
    সভা-সেমিনারে সভাপতির আসন অলংকৃত করতে । তার এই মেধাবী জীবন যার অনুষঙ্গে আরো মেধাবী ও মোহময় হয়ে উঠেছে তিনি তার সহকর্মীনি ও সহধর্মীনি সুমনা । ড. সুমনা সেন । যাকে ছাড়া অভ্র এখন অচল ।
         একদিন হঠাৎ ই সে দেখে ফেলে এক দেহাতি রমণ । তার পর থেকে কেমন এক নেশা চেপে যায় । লুকিয়ে দেখার মধ্যে এক অদ্ভুত মজা পায় সে । সেই মজা ক্রমে মর্ষকাম হয়  । প্রায় প্রতিদিন তার হাইরাইজ ফ্ল্যাট থেকে দেখা , দূরবীন সহযোগে দূরে ঝুপড়িতে দেহাতি নর-নারীর আন্তরিক রতি ।  রমণ শেষে তাদের কল্লোলিত হাসি ... ।
             অভ্রের কাতরতা বড়ে । বাড়ে ঈর্ষা । ক্ষোভ । রাগ । বাড়ে নাগরিক চতুরতা
  । ঝুপড়ি উচ্ছেদ অভিযানের এক জন সক্রিয় সদস্য হয় অভ্র ।
            ঘড়িতে এখন রাত দুটো । অভ্র বসে আছে তার স্টাডিতে । তার সামনে কোন জার্নাল বা থিসিস  পেপার নয় , টেবিলে পড়ে আছে একটা বহু পুরনো কবিতার অণু পত্রিকা "মা-নিষাদ" যার প্রচ্ছদে সঙ্গমরত পক্ষীমিথুনের মৃত্যু দৃশ্য  । ঐ ছবির দিকে ঠায় তাকিয়ে আছে অভ্র । কীএক ভালো না লাগা তার বুকে আটকে আছে । মাথায় মননে মেধায় এক কুরে খাওয়া অবসন্নতা    সে বুঝতে পারে না , এটা কি পরাজয়ের গ্লানি  ? নাকি জয়ের ।

কোন মন্তব্য নেই: