“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭

পরম্পরা



 ।। মধুমিতা নাথ।।


















বাপ ----
ইখন নিথর নাই হইবিক
কথা বল , কুছু কথা ...

কতক গল্প সুনাইছিলিস
পরদাদা তর চাসা ছিলস
লাঙল জুয়াল কান্ধে তুইলে
উহার জমিন চসাইছিলস

বাজরা জুয়ার গমের সিস
দুধেল ভইস আর গুলার ধান
বেবাক মাটির বেজান দিল
রোটি-রুজি সুখ-পরান

জমিনদারের জমিনদারী
কতক জমিন দখল নিলো
মজুর বইনে চাষার বিটা
পরদাদা তর পরান দিলো

উহার বিটার চাসার জান
আপনা মাটির দখল চায়
জমিনদারের লেঠেলগুলান
ভর-দুপরে লাঠি চালায়

তুহার বাপের চাসের জমিন
কতক গেলো কতক ছিলো
লাঙল ছেইড়ে পাওয়ার টিলার
মহাজনটা ধারে দিলো

সুখা জমির মিললো পানি
মহাজনেই বীজ ত দিলো
সার অ দিলো , ফসল হইলো
বেবাক সুদে পুষাই ভি নিলো

ঐ বাপ ----

ইখন ছিলস বেজান সুদিন
নাই মহাজন , জমিনদার
আলু ডালে ভরা জমিন
ইখন কিনে করলি ধার

ইত্ত ফসল ফলাইছিলিস
দাম ত উহার মিললো না
বেবাক দেনা জমলো বটেক
মকুব জারি হইলো না

তুহার সনে গকুল চাচা
রামু তাওজী , বসির ভাই
ছকল চাসার ইকটা কথা
দেনার সুদের মকুব চাই

তুদের কামের ঘাম বিকালো
পিঁয়াজ আলু ডালের দরে
দেনার ভারে তুহার ঘরে
বৌ বেটিরা ভুখা মরে

কইলি কথা আওয়াজ তুইলে
সড়ক পথে ছকল মিলি
দাদা মরলো লাঠির ঘায়ে
তুই ত খেলি বারুদ গুলি

লুটাই গেলো গকুল , রামু
আরো ছকল , সঙ্গে তুই
মুই ত আছি চাসার বিটি
লাঙল ছেইড়ে কলম ছুঁই

তুহার যতক কথা ছিলস
লিখব হামি , সুনবি নে ?
ঐ বাপ , তর লুহার বিটি ---
শেষ আগুনের দুয়া দে ।।

        ------------//-------------


কোন মন্তব্য নেই: