“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৭

গ্রামের নাম এরাসুতি

।। শৈলেন দাস।।



দী জল মাছ সাথে চাষবাস এই প্রাকৃতিক প্যাকেজ যেখানে থাকে কৈবর্ত সম্প্রদায়ের উপস্থিতি পাওয়া যায় সেখানে। তিনসুকিয়ার পর্যটন কেন্দ্র গুইজান ঘাটের উল্টোদিকে ডিব্রু নদীর তীরে ছোট একটি গ্রাম এরাসুতি। প্রায় শখানেক কৈবর্ত সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের সাথে মাত্র ছয় সাতটি অন্য সম্প্রদায়ের পরিবারে বাস এই এরাসুতি গ্রামে। ভৌগোলিকভাবে এরাসুতি গ্রামের অবস্থান খুবই বিচিত্র। একমাত্র ফেরী নৌকায় ডিব্রু নদী পার করলেই এই গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ঘটে বাইরের জগতের সাথে। চিকিৎসা, বাজারহাট করার জন্য তিনসুকিয়া শহরই একমাত্র ভরসা। তবে এই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পানীয়জলের জন্য রয়েছে কয়েকটি তারাপাম্প। জীবিকার জন্য এই গ্রামের মানুষ ডিব্রু নদী এবং পার্শ্ববর্তী ডিব্রু শৈখোয়া অভয়ারণ্যের জলাভূমিতে মাছ ধরেকিছু মানুষ শহরে দিনমজুরি করে। বর্ষায় ডিব্রু নদী যখন রুদ্ররূপ ধারণ করে তখন এলোপাথাড়িভাবে জল এই গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায়। সম্ভবত এই কারণেই এই গ্রামের নাম এরাসুতি। এরাসুতি গ্রামের বাসিন্দা কৈবর্তরা মূলত বাঙালী হিন্দু তবে বৃহত্তর অসমিয়া সমাজের সাথে কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করার কারণে তারা অসমিয়া ভাষায় কথা বলা রপ্ত করেছে নিজেদের মাতৃভাষার মতই। এরাসুতি গ্রামে বসবাসকারী কৈবর্তদের মধ্যে কয়েকজনের আবার সংযোগ রয়েছে বরাক উপত্যকার সাথে। ছবিতে আমার সাথে যারা রয়েছেন তাদের একজন হলেন শনবিলের একসময়ের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব শ্যামবাবু মানে শ্যামাচরণ দাসের নিকটাত্মীয়।

বি:দ্র: ৬ষ্ট উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় লিটল ম্যাগাজিন মেলা সমাপ্তির পরের দিন আগরতলা থেকে প্রকাশিত 'বজ্রকন্ঠ' লিটল ম্যাগের সম্পাদক কবি রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত 'শাংখিক' লিটল ম্যাগের সম্পাদক সুকান্ত দাস, শিলচর থেকে প্রকাশিত 'পাগলবনে' লিটল ম্যাগের সম্পাদক কবি রাজেশ শর্মা এবং 'প্রতাপ' সাহিত্য পত্রিকার পক্ষে অবনী দাস (আসাম পুলিশে কর্মরত), তরুণ কবি রাজু দাস, সুশীল দাস ও কবি-সম্পাদক শৈলেন দাস সম্মিলিতভাবে এরাসুতি গ্রাম পরিভ্রমণ করে স্থানীয় কৈবর্ত সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।

কোন মন্তব্য নেই: