“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

প্রতিদান

কে হায় আছে এতিমের ডাকে সাড়া দিতে ?
আছে সবাই তো স্বার্থটারে ধুইয়ে মুছে নিতে ।
ডাকে মোরে হিমপতি... গাঁয়ের সে মুড়ল ,
হাজির হই জননীর বুকে মারি কুড়োল ।
অসহায় জননী রোগাক্রান্ত , অচল ...,
বয়সের ভারে সে হারাইছে গায়ের বল ।
আমি ছাড়া এই ভুবনে আর যে কেহ নাই
সন্তান আমি বড় হয়েছি স্বার্থপরের ছায়ায় ।
মায়ের আছে অনেক সম্পদ মায়েরই নামে,
মা যদি না থাকতো, থাকতো আমার নামে ।
বুঝি নাই আদ্যো আমি মায়ের গর্ভে করে
আসা আমার এই নিখিলে মায়ের হাত ধরে ।
আজি আমি সম্পদ লোভে সেই জননীকে ,
খুন করি বিদায় দেই সাধের ভুবন থেকে ।
কায়দা মতো খুন করি আল-কায়দা বেশে ,
মুড়লের কাছে হাজির হই, আমি অবশেষে ।
মুড়লের কর্ম সেরে , মুড়লকে সঙ্গে নিয়ে ,
বাড়ী আমি হাজির হই মা'কে সালাম দিয়ে ।
অন্দরেতে মায়ের লাশ দেখে দেই চিৎকার ,
মুড়ল মোরে বুকে নিয়ে করলো যাহা দরকার ।
মুড়ল থাকা-ই খালাশ পেলুম খুনি আসামী
স্বার্থের দুনিয়ায় হায় স্বার্থপর এই আমি ।
খুনের বদৌলতেও আমি চাই যে শুধু স্বার্থ ,
স্বার্থ ছাড়া ভাবি আমার জীবনটা যে আর্ত ।
হয়ে গেলুম একলা আমি সম্পদ সব আমার
একলা থাকায় বাড়ীটা, লাগে যেন খামার ।
গাঁয়ের মুড়ল দেখে শুনে দিলো মোরে বিয়ে ,
সংসার আমি গড়লাম সেই নতুন বধূ নিয়ে ।
আমার ঘরে আসলো শেষে দু'টি সন্তান ,
যতই ভালো চাই যে আমি , হইলো তবু মাস্তান ।
ভাল ভাল চেয়ে তবু ভালোতে গেলোনা আঁটা
অবশেষে আমি বাবা হলাম তার পথের কাঁটা ।
পথের কাঁটা ভেবে মোরে, করলো সে খুন ,
ভাবি, পেলাম প্রতিদান , দানের চেয়ে দ্বিগুণ ।
ভুলে যাওয়া উচিৎ নহে এই দুনিয়ার নীতি ,
যাহা কিছুই করোনা তার বদলা পাওয়ার রীতি ।

কোন মন্তব্য নেই: