“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

কোরবানি

        
       ।।      রফিক উদ্দিন লস্কর   ।।

(C)Image:ছবি














ভোরের রবি আকাশে উঠে রূপ যে মলিন, 
ঊষার ধরণী হলো আজ বেদনায় বিলীন।
আজ নীরব ধরা তায় শুনি ইব্রাহীমের হাঁক
হাজেরা, ইসমাইলকে আজ সাজানো যাক্।
সাজিয়ে দাও ওকে, দেখুক বিশ্ব হয়ে হতবাক,
শত হাজার প্রশ্ন হাজেরার মনে তবুও নির্বাক।
কোথায় নেবেন নয়নের মনি ছেলেকে আমার
 
কি পয়গাম হয়েছে ফরমান! খোদাতায়ালার।
চাপিয়া মনের ব্যথা বেদনা
  ছেলেকে সাজায়,
বাঃ! পিতার পিছনে ছেলে চলে বিনা দ্বিধায়।
যাত্রাকালে বলেন পিতা, শুন হে পুত্র আমার,
জানো তুমি! আমার জন্য কি আহ্বান খোদার?
করে নত শির, পুত্র বলেন হে পিতা আমার,
বলুন তাহলে, আপনার তরে কি হুকুম এবার।
এবার বলিলেন পিতা ছেড়ে নয়নের পানি,
খোদা করেছেন যে আদেশ করিতে কোরবানি।
সে যে নয়নের মনি বুকের ধন পুত্রকে আমার,
 
শুনে অশ্রুঝরে আকাশ বাতাস ও তরু লতার।
সব দেখছেন খোদা আরশে বসিয়া এবার,
কি করিবেন দোস্ত ইব্রাহিম,
  হুকুমে তাহার।
সকল কথা শুনিয়া ইসমাইল বলেন পিতা ওরে,
তবে কেন দেরী করো, কোরবানি করিতে মোরে।
খোদার হুকুম করিতে রদ আছে কি কারো সাধ্য!
  
পাষাণে বাঁধিয়া বুক ইব্রাহিম নবী হইলেন বাধ্য।
নিজ পুত্রকে মাটিতে চেপে শোয়াইলেন এবার,
বাছা উঠিল বলে, পিতা ছুরিটা করিয়ে নিও ধার।
হে পিতা! কাপড়ে বাধিও দু'চোখ আপনার,
ছুরি চালাবেন আপনি বলে 'আল্লাহু আকবার।'
ইব্রাহিম নবী ছুরি চালাইলেন যবে পুত্রের গলে,
কি মাতাম শুরু হয় সৃষ্টির কুল মাখলুকে।
খোদার এমনি খেলা কেউ কি বুঝিতে পারে!
নয়ন মেলে দেখেন নবী, পুত্র হাসে দাঁড়িয়ে ধার।
পিতার হুকুমে ইসমাইল যাননি পিছে,
 
নবী দেখেন খোদার কুদরতি তাহার ছুরির নীচে।
খোদা বলেন, ওহে প্রিয় বৎস ইব্রাহীম আমার,
আমি কবুল করেছি যে কোরবানি তোমার।
০১/০৯/২০১৭ইং
নিতাইনগর, হাইলাকান্দি (আসাম-ভারত)

কোন মন্তব্য নেই: