“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭

আত্মসংলাপ

।। অভীক কুমার দে।।

(C)Image:ছবি


.
হাশূন্যের একটি দেশের নাম সৌরজগৎ। অনেকগুলো রাজ্য নিয়ে এই দেশ। তার মধ্যে পৃথিবীও একটি। সূর্যের পাঠানো আলোয় জল মাটি বাতাস এরা নিশ্চিন্তে বসবাস করতো একসময়।
জল। তরল সম্প্রদায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এরা বসবাস করে। জলের এতই ঐক্যবদ্ধ চলাচল যে, শরীর আলাদা করলেও মনের পরিবেশ একই থাকে।
মাটি। এদের সাম্প্রদায়িক কাঠিন্যতা অনেক, কিন্তু মন ভালো। জল থেকে দূরে সরে গেলে এরা পাথর হতে থাকে, আর যখনই কাছাকাছি থাকে--নরম,সরল,শান্ত।
বাতাস। গ্যাসীয় সম্প্রদায়। সবার দৃষ্টির অগোচরে অস্তিত্বটুকু জানান দিতে ভালোই জানে। জানে মিঠে সুরে মন ভোলাতেও।


ঘন জঙ্গলে সুখের ঘর, যদিও স্বপ্ন টেকেনি বেশিদিন। সময় এসে অসময়ের কাছে ধরা দিলে মানুষ নামক একপ্রকার ভাইরাস জন্মেছে এখানে। অল্প সময়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সারা রাজ্যে। এরা এতই ক্ষতিকারক যে অন্য রাজ্যেও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে বড় বড় দূরবীন খাটাচ্ছে। এরা মায়াবীও, জল মাটি বাতাসের উপর রাজত্ব করতে বেশিদিন সময় লাগেনি। বর্ণহীন জলকে মাঝরাতের রং মিশিয়ে কাতর করে তুলেছে কামনার বিষে, ধারালো নখ আঁচড় বসিয়েছে মাটির খোলা বুকে, বাতাসের অদৃশ্য অস্তিত্বেও সুখ নেই, উত্তাপ আর জ্বলন। 

এই ভাইরাস একে অপরকে প্রভাবিত করে। এদের অস্তিত্ব আলাদাভাবে প্রকাশ পেলেও সন্তুষ্ট হয় না। প্রতারণা বৈশিষ্ট্যগত। নিঃস্বার্থ উপকারীও নয় এরা। যদি কখনও এমন হয়, তবে ব্যতিক্রমী বা অস্বাভাবিক। সাময়িক সুখের জন্য অকাল মৃত্যুকেও ভয় পায় না, অথচ মৃত্যুর কাছাকাছি এলে আত্মসংলাপে মেতে ওঠে।
......................

কোন মন্তব্য নেই: