“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮

মৃত্যু

বন্ধুরা,  আমার দীর্ঘদিনের সাথী
শোকের কোন কারণ নেই আজ।
কেন মিছিমিছি তোমাদের এত দীর্ঘশ্বাস ।
যে রাসায়নিক বীজানু আমার শরীরে
অতি যত্নে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা ,
বহুদিন আগেই তার পেয়েছি আভাস ।
তাতে মৃত্যু আমার  স্থির ছিল প্রায়
ছিল সেই শুভক্ষণের শুধু অপেক্ষা।
বছরের পরে মাস, দিন তারপর---
তারপর আজ সেই ব্রাহ্মমুহূর্ত ।
আজ অন্ত  সেই প্রতীক্ষার  ।

মৃত্যুকে আমি ভয় পাই নি কখনো
কোনদিনই ভয় ছিল না আমার
জন্ম যার হয়েছে , মৃত্যু স্বাভাবিক
তাই যখন জানতে পারি প্রথম সেদিন
কর্কটের কুদৃষ্টি পড়েছে আমাতে
সেদিনই জানি আমি সাধু সাবধান।
মৃত্যু দুয়ারে প্রায়, তারই ফরমান ।

কর্কট রোগটা শুনেছি ভীষণ খারাপ
ভেতরেতে নিঃশব্দে সে কাজ করে যায়
মাকড়সার জালের মতো  ছড়িয়ে প্রভাব
আমার দুটো স্তনেই সে গেঁথেছে শিকড় ।
কাঁদছে সন্তানেরা , হায় অভুক্ত কোলে,
তবু লড়াইটা দিয়েছিলাম শক্ত হাতে ।
দুর্ভাগ্য আমার,
ক্রমাগত আফিঙের শক্ত নেশায়
আমার সকল অঙ্গ আজ বিকল প্রায়।
অসম যুদ্ধ শেষে বিজিত সেজেছি ।
যুদ্ধবন্দি আমি , হব শূলবিদ্ধ এবার ।
মৃত্যুকে কোনদিনই করি নিকো  ভয়।
যাবার আগে শুধু  বলে যেতে চাই
যারা বেঁচে রইলে, সাবধান ভাই
ভালো রেখো , ভালো থেকো, আর
নিজেদের বাঁচিয়ে রেখো ।
তোমাদের মঙ্গল হোক, আর -----
আর , বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।


কোন মন্তব্য নেই: