“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮

শর্মিলা

।। অভীক কুমার দে ।।
    গো শুনছো, দেখো তো... কেমন লাগছে ? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের শরীরের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থেকেই কথাগুলো বলছিল শর্মিলা। প্রায় ঘন্টাখানেক সাজগোজের পর মনে হলো এবার জয়কে ডেকে দেখানো যেতে পারে।
জয় আজ অফিসে যায়নি। কদিন ধরেই ভাবছিল কাগজ-কাটা পোকার উপদ্রব বেড়েছে। আলমারিটায় একটু ঝাঁট দেওয়া দরকার। কতো দামি বইয়ের ভেতর নিজের আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছে। যদিও ক্ষুধায় প্রাণী কী না করে, তা বলে শব্দ খাবে ! না, আজ একটা তদন্ত করতেই হবে।
-- কই, তোমাকে কী বলছি ?
উম, আমাকে বলছো ?
-- তবে কাকে বলবো !
আমি ভাবছিলাম আয়নাকে। যেভাবে তাকিয়ে আছো, আয়নার প্রতিফলন- ক্ষমতা হারিয়ে যাবার কথা।
-- বলো না, প্লিজ।
তোমাকে সাজলে খারাপ লাগে না, কিন্তু যখন ভাবি তোমার সাজার প্রয়োজন হয় তখনই খারাপ লাগে।
-- বুঝিনি।
তোমার আমার প্রথম যখন সংসার শুরু, দুজনেই অন্তরে অপরিচিত ছিলাম। তোমার রূপ আমার ভালো লেগেছিল। আমি তোমার রূপে ডুব দিয়ে রঙের ভেতর তোমাকেই খুঁজেছি। যতবার সাজো ততবারই নতুন হয়ে যাও। তোমার রূপ বদলাতে থাকে, আমি অপরিচিত হতে থাকি।
-- তোমার জন্যই তো সাজি !
হুম। আমি আর আমার আয়নার জন্য।
-- জয় জানো, অন্তু'র মা সেদিন অন্তুর সামনেই বলে বসলো-- আমি নাকি দিন দিন আরও সুন্দর হয়ে উঠছি। আমি লজ্জায় তাকাতে পারছিলাম না।
ঠিকই তো। শর্মিলা তুমি আরো আরও সেজে লাজুক হতে থাকো। আমার আয়না দেখুক।
       জয় একেকটি বই ঝেড়ে টেবিলে রাখছিল। একটু সময় চুপ থেকে বললো-- আমার আলমারিতে পোকায় বাসা করেছে। আজ থেকে ঝাঁট দেবো। অনেক দামি বই। পড়া বাকি।



কোন মন্তব্য নেই: