“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮

স্মরণে ঊনিশে মে

।। চিরশ্রী দেবনাথ।। 
(C)Image:ছবি








মার খুব কষ্ট হচ্ছিল
লিখতে লাগলাম, লিখতে লিখতে
গলিতে সন্ধ্যা নামল, দিকচিহ্নহীন পাগলের চোখের মতো !
জ্বলে উঠল মোড়ের মাথার নিওনবাতি
আবছা আলোয় রাস্তার ধুলোতে অক্ষরের সবল শরীর,
তারা বলতে লাগল এক উদ্বাস্তু পুরুষের কথা
যাকে ছুঁয়ে ছিল নারী, শিশু, বৃদ্ধের দল
অদ্ভুত এক কীর্তনের সুর যেন পাখির ডুবন্ত শিষ
সেসব লেখায় মিশে যেতে লাগল নক্ষত্রের ভালোবাসাবাসি
পাশে বয়ে চলা দুগ্ধনদী, সফেন অন্ধকারে ধোঁয়া ওঠা অমৃত অথবা বিষের হাতছানি,
নিশিপাওয়া যুবক যুবতীরা বলছে, হেসে কেঁদে শুধু বলে যাচ্ছে,
...হৃদয়ের সকল ভাষা অশ্রুমতী  হও।
ভাষা কেড়ে নিলে কী হয়!
আগাছার মতো দুর্বল এক অনুচ্চ প্রজাতি জমি স্পর্শ করে থাকে
চাষ হয় না...আবাদ হয়,
হাজার কীটের দংশনে শুয়ে থাকে বাটুল সংস্কৃতি।
ভাষায় যেন না লিখি অক্ষমের  প্রতিবাদ, গালাগাল, খিস্তি।
শুধু ময়ূরীর রঙে আঁকা অভিমান পড়ে থাক, হলকা মেঘস্তুপ,
আমিও ঘুম থেকে ক্রমাগত আচ্ছন্নতা সরিয়ে নিচ্ছি,
অস্ফুট সকাল গাইছে  তাজা  মেঘমল্লার।
বিশ্বাসঘাতকতা দেহচরাচরে, অন্তরে এই মাত্র খুন হলো দুই এক বিন্দু আমি
তবে কি ক্ষমা চাইবো?
নিজের ভেতর হতাশায় ম্লান দুরন্ত সম্রাজ্ঞী।
অকাল বৃদ্ধা । হারিয়েছে মুক্তো হার।  সাহসের লকেট।
এবার ক্যানভাসে দীপালোক, জ্বলছে কালির দাগ।
গ্রীষ্ম অনাকাঙ্ক্ষিত । বর্ষা নিভছে।
হেমন্ত আমার প্রিয় যোদ্ধা।
মৃদু শীতে পাড়ি দেবো কয়েক ক্রোশ,  মুঠোতে কুয়াশা।
ছড়াবো না।
আগে ঝরে পড়ুক ভাষার সকল অভিমান।
উদ্ধত সিংহাসন হোক একটি একটি মাতৃভাষার।
নিরাপদ রাজ্যপাট, হাজার একর জমিতে সোনালি ধান।


কোন মন্তব্য নেই: